৭টি সিগারেট খাওয়ার সমান দূষণে জর্জরিত দিল্লির বাতাস

দিল্লির বাতাসকে প্রায় ৭টি সিগারেট খাওয়ার সমতুল্য দূষণে জর্জরিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) অনুসারে, দিল্লির বাতাসের গুণমান "ভীষণ খারাপ" পর্যায়ে পৌঁছালে প্রতিদিন সাতটির বেশি সিগারেট খেলে মানব শরীরে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়, বর্তমানে দিল্লির বাতাসে শ্বাস নিলে সেই পরিমাণই ক্ষতি হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
তবে, দূষণের মাত্রা অনুযায়ী এই সংখ্যাটি পরিবর্তিত হয়। বিভিন্ন সময়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে এই সংখ্যা আরও
কখনও কখনও এটি প্রতিদিন ২১ থেকে ২৫টি সিগারেট খাওয়ার সমান বলা হয়েছে।
আবার সর্বোচ্চ দূষণের সময়, যেমন নভেম্বর মাস নাগাদ, এটি ৪৯টি সিগারেট খাওয়ার সমতুল্যও হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এই তুলনাটি মূলত বাতাসের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) এবং তাতে উপস্থিত সূক্ষ্ম কণাগুলির (PM 2.5) ঘনত্বের উপর ভিত্তি করে করা হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
সোমবার ফের ‘ভীষণ খারাপ’ পর্যায়ে পৌঁছল দিল্লির বাতাসের গুণগত মান। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (সিপিসিবি)-এর মতে, দিনে সাতটার বেশি সিগারেট খেলে মানব শরীরে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়, বর্তমানে দিল্লির বাতাসে শ্বাস নিলে, সেই পরিমাণই ক্ষতি হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
বাতাসের গুণাগুণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সূচক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই)-এর তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ রাজধানীর সামগ্রিক বাতাসের গুণমান সূচক ছিল ৩১৬। একইসঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় বাতাসে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে পিএম ২.৫-এর ঘনত্বও।
সোমবার সকালে দিল্লির বাতাসে পিএম ২.৫-এর পরিমাণ ছিল ১৬৮ µg/m³, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত সীমা থেকে অনেকটাই উপরে। সিপিসিবি-এর মনে করছে, একদিকে ধোঁয়াশার ঘনত্ব, অন্যদিকে বায়ুর গতিবেগ একেবারে মৃদু- যার ফলে দূষণ লাফিয়ে বাড়ছে। সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতি হোলাম্বি খুরদ গ্রাম, গৌতমপুরী, মুস্তাফাবাদ, মহরম মহল্লা এবং শাহদারার। সেখানে দূষণের মাত্রা যথাক্রমে ৫৬১, ৪০৮, ৩৮০, ৩৪৪ এবং ৩১২।
উল্লেখ্য, একিউআই ০-৫০ -এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’, ৫১-১০০ থাকেল ‘সন্তোষজনক’, ১০১-২০০ থাকলে ‘মাঝারি’, ২০১-৩০০ থাকলে ‘খারাপ’, ৩০১-৪০০ থাকলে ‘ভীষণ খারাপ’ এবং ৪০১-৫০০ থাকলে ‘ভয়ানক’ বলে বিবেচিত হয়।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, ২০ অক্টোবর দীপাবলির পর থেকেই বিষাক্ত হয়ে উঠেছে দিল্লির বাতাস। তাই ‘ক্লাউড সিডিং’-এর ব্যবস্থা করেছিল দিল্লি সরকার। মঙ্গলবার তার ট্রায়াল হয়। কিন্তু বৃষ্টি হয়েছে প্রত্যাশিত মাত্রার চেয়ে অনেক কম। অথচ ইতিমধ্যেই তিনটি ব্যর্থ ট্রায়াল বাবদ প্রায় ১.০৭ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি। বরং লাফিয়ে বাড়ছে দূষণ।
সময়সীমা বেঁধে দীপাবলিতে ‘সবুজ বাজি’তে সম্মতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে সে সময়সীমা বাস্তবে কার্যকর হয়নি। রাতভর অবিরাম আতশবাজির দৌরাত্ম্যে দূষণে হয়ে উঠেছিল দিল্লির বাতাস। বাতাসের গুণগত মান (AQI) ৪৫১তে পৌঁছে যায়। যা ‘ভীষণ খারাপ’ পর্যায়ে পড়ে। এরপর বেশ কয়েকটা দিন কেটে গেলেও ‘দমবন্ধ’ অবস্থা কাটেনি দিল্লির। আর এই পরিবেশে বাড়ছে অসুস্থতা, বাড়ছে উদ্বেগ।








