ঢাবিতে উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে বিতর্কে সর্বমিত্র চাকমা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় দুই সপ্তাহ ধরে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছেন ছাত্রশিবির নেতৃত্বাধীন ডাকসু নেতারা। এই অভিযান কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে সমাজসেবা সম্পাদক সর্বমিত্র চাকমা। তিনি বিভিন্ন “অবৈধ” দোকান, ভবঘুরে, উদ্বাস্তু ও নেশাগ্রস্তদের উচ্ছেদ করছেন। অভিযানের সময় হেনস্তা, মারধর ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে, যা শুরু থেকেই সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
প্রাথমিকভাবে অভিযান পরিচালনায় দেখা গেছে ডাকসু সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়েরকে, কিন্তু পরবর্তীতে কার্যক্রমের নেতৃত্বে সর্বমিত্র চাকমা সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসেন। সর্বশেষ, গত মঙ্গলবার রাতের একটি ঘটনা ভাইরাল হওয়ায় তিনি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।
ভিডিওতে দেখা যায়, সর্বমিত্র লাঠি হাতে একজন বৃদ্ধকে শাসাচ্ছেন এবং বৃদ্ধের বস্তা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সর্বমিত্র পরে “মাঠে না থাকা” ঘোষণা দেন।
বিজ্ঞাপন
এই উচ্ছেদ অভিযানের দায়িত্বে ছিল ৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা, পুলিশ ও ডাকসুর নেতা-সদস্যরা ছিলেন। কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সর্বমিত্র নিজ উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন, যদিও তাকে মূল কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
সর্বমিত্র চাকমা নিজেকে এই কার্যক্রমের ন্যায্যতা ব্যাখ্যা করে বলেন, লাঠিসোটা ছাড়া বা ভয়ভীতি প্রদর্শন না করে এই লোকগুলো সরানো কঠিন। সম্প্রতি দুই নারী শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হয়েছেন। উচ্ছেদ অভিযান আমার ব্যক্তিগত দায়িত্ব নয়, তবে প্রয়োজনে সহায়তা দিচ্ছি।
দুই পক্ষের সমালোচনা স্পষ্ট। ছাত্রশিবিরের সমর্থকরা সর্বমিত্রকে প্রশংসা করছেন, কিন্তু বামপন্থি ছাত্র সংগঠন ও নেটিজেনরা উচ্ছেদ অভিযান ও হয়রানির প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ডাকসু নেতৃত্বের উচ্চপদে থাকা ভিপি-জিএসরা সরাসরি অভিযানে ছিলেন না, তবে সামাজিক মাধ্যমে তারা উচ্ছেদ অভিযানের পক্ষে সক্রিয়।
বিজ্ঞাপন
উচ্ছেদ অভিযানের কারণে ক্যাম্পাসের প্রবেশপথ ও পরিবেশ বিপর্যস্ত। যানবাহন প্রবেশে বাধা, সাধারণ মানুষকে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালনা হলেও মানবিক দিক ও আইনগত এখতিয়ারের বিষয়টি সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেল নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে উচ্ছেদ অভিযানের পদ্ধতি এবং নেতাদের আচরণ নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা এখনো তীব্রভাবে চলছে।








