রাঙ্গাবালীর চরহেয়ার দ্বীপে বিদেশী পর্যটকদের পদচারণা

বিস্তৃর্ণ জলরাশি, অতিথি পাখির কোলাহল, সবুজ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য আর অফুরন্ত সাগরের ঢেউ-প্রকৃতির এক অনন্য মায়াবী রূপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার দ্বীপগুলো। এখানে আছে সোনারচর, চর হেয়ার, জাহাজমারা আর তুফানিয়ার মতো প্রাকৃতি সৌন্দর্যে ঘেরা সৈকত। এক ভ্রমনে চার সৈকত দেখার এক বিষ্ময় সুযোগ যেন কড়া নেড়ে জানান দিচ্ছে পর্যটকদের। একসময় ছিল শুধু স্থানীয়দের ঘোরাঘুরির জায়গা, এখন ধীরে ধীরে রাঙ্গাবালী জায়গা করে নিচ্ছে দেশের পর্যটন মানচিত্রে। বাড়ছে দেশি-বিদেশী ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণা।

কথা হয় এক দেশী পর্যটক ও অভিনেতা সাদ্দাম মাল এর সাথে তিনি বলেন, রাঙ্গাবালী পর্যটনের জন্য এক সম্ভাবনাময় জায়গা। এখানে যে চারটি সৈকত আছে তার প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা সৌন্দর্য আছে। আমরা এসব দেখে উপভোগ করি এবং মুগ্ধ হই। সবমিলিয়ে মন ভালো করতে আর ঘুরতে অন্যন্য সৌন্দর্যে ঘেরা রাঙ্গাবালী বারবার কাছে টানবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা শেষে উন্মুক্ত হলো কেওক্রাডং পর্বত

শুধু দেশি নয়, এই সৌন্দর্য টেনে আনছে বিভিন্ন দেশের বিদেশি পর্যটকদেরও। দেশি পর্যটকদের সাথে বিদেশিদের পদচারণায় এটি ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে পর্যটনের নতুন গন্তব্য। সম্প্রতি রাঙ্গাবালী ঘুরে মুগ্ধ হয়েছেন হাঙ্গেরির টমাস, চেক রিপাবলিকান নাগরিক রাদেক, মাল্টা থেকে ড্যারেন, সুইজারল্যান্ড থেকে টাচিয়ানা, জার্মানি থেকে হেনড্রিকসহ অসংখ্য বিদেশী পর্যটকরা।

বিদেশি পর্যটক আকর্ষণের পেছনে কাজ করছেন স্থানীয় যুবক শাওন আহমেদ। কখনো বিদেশী পর্যটকদের সাথে গানের আড্ডায় আবার কখনো তাদের ই”ছায় বাংলা শব্দ শেখানোর আড্ডায়। এছাড়াও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনধারা,তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য,জেলেদের জীবনবাজি রেখে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করা,জলে ভাসা মান্তা সম্প্রদায়ের জীবনকাহণ সহ নানা বিষয়ে বিদেশী পর্যটকদের ধারনা দিতে বেশ পটু এই যুবক। ইউটিউব থেকে ইংরেজি শিখে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালিয়ে পরিচিত করছেন রাঙ্গাবালীর দর্শনীয় স্থানগুলোকে।

লোকাল গাইড ও ট্যুর প্রমোটার শাওন আহম্মেদ বলেন,যোগাযোগ ব্যাবস্থাকে আরো সহজলভ্য করতে পারলে রাঙ্গাবালী পর্যটন খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ভ্রমণে ঘুরে দেখতে পারেন যেসব দর্শনীয় স্থান

যোগাযোগ ব্যাবস্থায় সরকার অগ্রনী ভূমিকা পালন করলে বিদেশী পর্যটকরা আরো সহজেই আসতে পারবে এ অঞ্চলে। আর যারা ইতোমধ্যে রাঙ্গাবালী ঘুরে গেছেন তাদের রিভিউ বেশ ভালোই এবং তারা ফুললি স্যাটিস্ফাইড।

স্থানীয় প্রশাসন বলছেন, রাঙ্গাবালীর পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যাবস্থার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব দাশ পুরকায়স্থ বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি এখানে প্রতিবছর বেশ ভালো সংখ্যক দেশীয় পর্যটকদের পাশাপাশি দুই-তিন জন করে বিদেশী পর্যটকরাও আসছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যা যা করণীয় সেসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।